পোরশা সীমান্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে রাসেলস ভাইপার

 



সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: হঠাৎ করেই নওগাঁর পোরশা উপজেলার সীমান্ত এলাকা নিতপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার।

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমবাগান ও ধান ক্ষেতে দেখা যাচ্ছে রাসেলস ভাইপার নামের বিষধর এই সাপ। সম্প্রতি সীমান্তের নিতপুর এলাকার গানইর গ্রামে ও বিভিন্ন ধান ক্ষেতে ও আমবাগানে সমন্বিত চাষ করা মাশকলাই গাছের মধ্য থেকে পাওয়া বেশ কয়েকটি রাসেলস ভাইপার মেরে ফেলা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে।

এর ফলে স্থানীয় লোকজন কিছুটা আতঙ্কে আছে বলেও জানান তারা। পোরশা পূর্ব গ্রামের দিনমজুর শ্রমিক জালাল উদ্দিন জানান, তারা কয়েকজন শ্রমিক পোরশা সরকারি কলেজ এলাকার ডাঁটঠোকা নামক স্থানে আমবাগানের মধ্যে চাষ করা মাসকলাই গাছ তুলতে যান।

এসময় তারা সেখানে রাসেলস ভাইপার সাপ টি দেখতে পান এবং তারা সাপটি মেরে ফেলেন। এরকম সাপ তারা কোনদিন দেখেননি বলে জানান।

তবে এ ধরনের সাপকে স্থানীয়রা তাদের ভাষায় চন্দ্রবোরা বলেন এবং সাপটি মারাত্বক বিষধর বলে জানান। এরকম সাপ কয়েকদিন পূর্বে সীমান্তবর্তী সোহাতি গ্রামের আমবাগানে মাসকলাই তুলতে গিয়ে দেখতে পেয়েছেন এবং সাপটিকে তারা মেরে ফেলেছেন বলে জানান। কাশিতাড়া গ্রামের হাবিব জানান, তার গ্রামের পার্শবর্তী পলাশডাঙ্গা আশ্রয়ন গ্রামের পাশে ধানী জমিতে কৃষকরা ধান কেটে রেখে ছিলেন।

কয়েকদিন পর সন্ধায় কৃষকরা ওই ধান নিতে গিয়ে ধানের আটির নিচে এই বিষধর রাসেলস ভাইপার দেখতে পান। তারা সাপটি মেরে ফেলেছিলেন বলেও তিনি জানান। এসব ঘটনায় স্থানীয় কৃষকরা অনেক আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানান তিনি। সোহাতি গ্রামের মজিবর রহমান মাস্টার জানান, কয়েকদিন আগে গানইর গ্রামের পাশে তার ধানের জমিতে গিয়ে তিনি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পান। এসময় তিনি সাথে সাথেই সাপটি মেরে ফেলেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে নিতপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তিকে এই সাপ কামড় দিলে ওই ব্যক্তি গুরুতর আহত হন।

পরে তাকে পোরশা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকরা হলে এন্টিভেনম প্রয়োগ করে বেঁচে যান। সূত্র মতে, বরেন্দ্র খ্যাত এই অঞ্চলে দীর্ঘ্য কয়েক বছর পর বিগত ২০১৩ সালে রাসেলস ভাইপার সাপ দেখা যায়। এসময় ওই সাপের বিস্তার না ঘটলেও ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালে নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

সে সময় সাপের কামড়ে অনেক মানুষের মৃত্যুও হয়। তবে ২০১৭-১৮ সালে এ উপজেলায় সাপের উপদ্রব কম দেখা গেলেও চলতি বছর আবারওবিষধর এ সাপটির উপদ্রব বেড়েছে। চলতি বছর রাজশাহীর গোদাগাড়ি ও তানোরে ব্যাপক ভাবে সাপটি দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা বন কর্মকর্তা সাদেকুর রহমান জানান, যে কোন প্রাণীকে মেরে ফেলতে বলা যাবেনা। তবে তিনি একজন বন কর্মকর্তা হিসাবে কৃষকদের সতর্ক থেকে জমিতে কাজ করতে বলেন এবং এ অঞ্চলে রাসেলস ভাইপার বেশী বিস্তার কারায় এর কি ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে সে ব্যাপারে বন বিভাগের প্রাণী সংরক্ষন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌফিক রেজা জানান, কিছুদিন আগেও হাসপাতালে এন্টিভেনাম ছিল এবং তারা সাপের কামড়ে আহত রোগিকে চিকিৎসা দিয়েছেন।

বর্তমানে হাসপাতালে কোন এন্টিভেনাম নেই। তারপরেও সাপের কামড়ে আহত কোন রোগি হাসপাতালে আসলে তারা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। তবে রাসেলস ভাইপার সহ যে কোন সাপের বিষের প্রতিশেধক এন্টিভেনাম হাসপাতালে পাওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে চাহিদা দেওয়া আছে। চাহিদা মত এন্টিভেনাম পেলে তারা আবার সাপের কামড়ে আহত রোগিকে চিকিৎসা দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post