মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য অন্যতম বিশেষ নেয়ামত হলো রমজান মাস। আর এ মাসে প্রত্যেক মুসলিম উম্মাহর জন্য রোজা রাখা আবশ্যক বা ফরজ।
এ মাসে মহাগ্রন্থ আল কোরআন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে।
রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে।
রোজাদারকে আল্লাহ নিজ হাতে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। হাদিসে কুদসিতে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, কিন্তু রোজা এর ব্যতিক্রম।
রোজা শুধু আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব’। (মুসলিম: ২৭৬০)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে বলেছেন, ‘হে মুমিন সকল।
তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপরও ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার’। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে, (অন্য বর্ণনায়) ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় তারাবির নামাজ পড়ে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়’। (বুখারি শরিফ: হাদিস নম্বর: ১৯০১)
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না: ন্যায়পরায়ণ শাসক, রোজাদার যখন সে ইফতার করে এবং অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া। ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৭৫২)
রমজানে ইফতার গ্রহণের মাধ্যমে রোজাদার রোজা ভেঙে থাকেন। ইফতারের পূর্বে ও পরে কিছু দোয়া পড়তে হয়।
ইফতারের কিছুক্ষণ আগে যে দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে হয়
يَا وَا سِعَ الْمَغْفِرَةِ اِغْفِرْلِىْ
উচ্চারণ: ‘ইয়া ওয়াসিয়াল মাগফিরাতি, ইগফিরলী’।
অর্থ: ‘হে মহান ক্ষমা দানকারী! আমাকে ক্ষমা করুন’।
ইফতার করার জন্যও রয়েছে দোয়া। যার মাধ্যমে নেকি লাভ করা যায়। দোয়াটি হলো
اللهم لك صمت و على رزقك افطرتاللهم لك صمت و على رزقك افطرت
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া তাওয়াক্কালতু আ’লা রিজক্বিকা ওয়া আফতারতু বি রাহমাতিকা ইয়া আর হামার রা-হিমীন।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি’।
ইফতারের বাংলা দোয়া
‘হে আল্লাহ তাআলা আমি আপনার নির্দেশিত মাহে রমজানের ফরজ রোজা শেষে আপনারই নির্দেশিত আইন মেনেই রোজার পরিসমাপ্তি করছি ও রহমতের আশা নিয়ে ইফতার আরম্ভ করছি। তারপর ‘বিসমিল্লাহি ওয়ালা বারাকাতিল্লাহ’ বলে ইফতার করা।
ইফতারে এ দোয়াও পড়া যায়। তা হলো
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ
উচ্চারণে: ‘আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়ালা রিজকিকা আফতারতু’।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনার জন্য আমি রোজা রেখেছি, আপনার রিজিক দ্বারা ইফতার করছি’। (আবু দাউদ, সাওম অধ্যায়)
ইফতার করার সময় বা ইফতার করার পরে আরেকটি দোয়ার কথা হাদিসে এসেছে।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইফতার করাকালীন এই দোয়াটি করতেন।
ইফতার করাকালীন বা পরবর্তী দোয়া
ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ
উচ্চারণে: ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া সাবাতাল আররূ ইনশাআল্লাহ’।
অর্থ: (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সওয়াবও স্থির হলো’। (আবু দাউদ, মিশকাত)
ইল্লেখ্য, ইফতারের পূর্বে এবং পরে দোয়া পড়া সুন্নত। তবে কেউ দোয়া না পড়লেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। রোজা শুদ্ধ হয়ে যাবে।